বাংলাদেশের অপরূপ সুন্দর কয়েকটি জেলার মধ্যে নওগাঁ অন্যতম। ঐতিহাসিক গুরুত্বের দিক দিয়ে নওগাঁ জেলা অত্যন্ত সমৃদ্ধ। চলুন নওগাঁ জেলার ইতিহাস ও কিছু দর্শনীয় স্থান এবং খেলাধুলা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
নওগাঁ জেলার ইতিহাস
বাংলাদেশের উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল নওগাঁ। ভৌগলিকভাবে এই জেলাটি বৃহত্তর বরেন্দ্রভূমির অংশ। অসংখ্য ছোট ছোট নদীর লীলা ক্ষেত্রে এই অঞ্চল। আত্রাই নদীর তীরবর্তী এলাকায় ছোট ছোট গ্রামগুলোকে নিয়ে নওগাঁ জেলা গড়ে ওঠে।
বাংলাদেশ উত্তর পশ্চিমভাগে, বাংলাদেশ ভারত আন্তর্জাতিক সীমারেখা সংলগ্নে যে ভূখণ্ডটি রয়েছে সেটি বর্তমানে বাংলাদেশের নওগাঁ জেলা। নওগাঁ শব্দের উৎপত্তি হচ্ছে ফরাসি ভাষার “নুতন” থেকে “নও” এবং “গ্রাম” শব্দ থেকে “গা” শব্দের উৎপত্তি হয়।
এই শব্দ দুটি সংমিশ্রণে “নওগাঁ” উৎপত্তি হয়। যার অর্থ দাঁড়ায় “নতুনগ্রাম”। বাংলাদেশের উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলের এই নূতন গ্রামটি বর্তমানে নওগাঁ হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে নওগাঁ জেলা আমের জন্য বেশ বিখ্যাত। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের লীলাভূমি নওগাঁ জেলার কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
নওগাঁ জেলার কিছু দর্শনীয় স্থান
প্রিয় পাঠক এই পোস্টে আমরা বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আলোচনা করব সেই স্থানটির নাম হচ্ছে নওগাঁ। আমরা অনেকেই হয়তো নওগাঁ নামটি শুনেছি। নওগাঁ জেলাটি রাজশাহী বিভাগের মধ্যে অবস্থিত যা ছোট যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। নওগাঁ জেলার আয়তনের কথা বলতে গেলে ৩৭.০৮ বর্গ কিলোমিটার এবং এই জায়গার জনসংখ্যা প্রায় ১৫০,৫৪৯ জন।
নওগাঁ জেলা বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের একটি শহর। যে শহরে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। নওগাঁই কি কি দর্শনীয় স্থান রয়েছে এবং দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হলো।
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার
কুসুম্বা মসজিদ
ঘুঘুডাঙ্গা নিয়ামতপুর
রঘুনাথ মন্দির- ঠাকুরমান্দা
জগদ্দল বিহার
দিব্যক জয়স্তম্ভ
পতিসর রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি
বরেন্দ্র গার্ডেন শিশু পার্ক নিয়ামতপুর
বলিহার রাজবাড়ী
ভবানীপুর জমিদার বাড়ি
ভিমের পান্টি
আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যান
শালবন
জবই বিল
মাহীসন্তোষের মাজার
দিবরের দীঘি
হলুদ বিহার
কামতা এস,এন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভান্ডারগ্রাম
রাতোয়াল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়, রাতোয়াল
ইসলামগাঁথী প্রাচীন মসজিদ ও মঠ
অগ্রপুরী বিহার
পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারঃ সুপ্রাচীন বাংলার এক ধ্বংসপ্রাপ্ত বৌদ্ধবিহার যা সম্পুর মহাবিহার নামেও পরিচিত। বিহারটির অবস্থান নওগাঁ জেলার বদল গাছি উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামে অষ্টম শতকের শেষের দিকে নির্মিত এই বিহারটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের ধর্ম শিক্ষা দান কেন্দ্র ছিল। পূর্ণ বর্ধনের রাজধানী পূর্ণ নগর যা বর্তমানে মহাস্থানগড় এবং অপশহর কোটিবরশো যা বর্তমান বানগড় এর মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত ছিল শ্মপুর মহাবিহার।
অষ্টম শতকে শেষের দিকে পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদ্বীপ বৌদ্ধ বৌদ্ধবিহারটি করেন। শুধু উপমহাদেশ নয় চিন, মায়ানমার সহ অনেক দেশের বৌদ্ধরা এখানে ধর্ম চর্চা ও ধর্ম জ্ঞান অর্জন করতে আসতেন। অনেক পন্ডিত মনে করেন এটি পৃথিবীর বৃহত্তম বৌদ্ধ বিহার।
কুসুম্বা মসজিদঃ এই মসজিদটি প্রায় ৪৫০শ বছরের পুরনো। নওগাঁ শহর থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দূরে মালদা উপজেলার কুসুমবাগ গ্রামে মুসলিম স্থাপত্য শৈলী অন্যতম নিদর্শন এই মসজিদটির অবস্থান। ইতিহাস থেকে জানা যায় আফগানি শাসনাআমলের সুর বংশের শেষ দিকে শাসক গিয়াস উদ্দিন বাহাদুর শাহ আমলে সুলাইমান নামে একজন এই মসজিদটি নিয়ে নির্মাণ করেছিলেন।
মসজিদের সম্মুখভাগে প্রায় ৭৭ বিঘা জমির উপরে রয়েছে একটি বিশাল দিঘী রয়েছে সুন্দর ঘাট। বেড়াতে এসে দর্শনার্থীদের অনেকেই দিঘির শীতল জলে গোসল শেরে নেয়ার সুযোগটি মিস করেননা। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৫৮ ফুট এবং প্রস্থে ৪২ ফুট দুই শাড়িতে ছয়টি গোলাকার গম্বুজ রয়েছে।
ঘুঘুডাঙ্গাঃ কালের বিবর্তনের তালগাছ হারিয়ে গেলেও নওগাঁর নিয়ামতপুরে ঘুঘুডাঙ্গা এখন কালের সাক্ষী হয়ে শত শত তাল গাছের শাড়ি রাস্তার দুই ধারে সৌন্দর্য বর্ধন করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘতম দৃষ্টিনন্দন তালগাছের সড়ক এই ঘুঘুডাঙ্গা এবং ইন্টারনেটের দুনিয়ায় নওগাঁকে দিয়েছে নতুন এক পরিচিতি।
হাজিনগর ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম ঘুঘুডাঙ্গা। হাজিনগর গ্রাম থেকে ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামে যাওয়ার পথে প্রায় ৬০০ তালগাছে দাঁড়িয়ে আছে যাহা প্রতিদিন হাজারো বৃক্ষপ্রেমী ও ভ্রমণ পিয়াসীরা আসেন এই তালগাছ দেখতে।
জগদ্দল বিহারঃ বাংলাদেশের বৌদ্ধধর্মের প্রথম প্রবেশ খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ শতকে হলেও তা প্রবলভাবে বিকাশ লাভ করে খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে পাল বংশ রাজাদের হাত ধরে প্রায় ৪০০ বছরে গৌরবময় রাজত্বকালে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী পাল রাজারা বৌদ্ধ ধর্মের প্রসারে অসংখ্য বৌদ্ধমত মন্দির ও বিহার প্রতিষ্ঠা করেন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল জগদ্দল মহাবিহার। জগদ্দল মহাবিহার ধামুই হাট উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে অবস্থিত।
দিব্যক জয়স্তম্ভঃ বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার দিবর ইউনিয়নের দিবর গ্রামে অবস্থিত ঐতিহাসিক দিবর দিঘির মাঝখানে বাঙালি আভিজাত্যের প্রতীক দিব্যক জয়স্তম্ভ অবস্থিত। দিবর দীঘিতে অবস্থিত গোলাকৃতির ৮ কোন বিশিষ্ট গ্রানাইট পাথরের জয়স্তম্ভ এর উচ্চতা ৩১ ফুট ৮ ইঞ্চি যার ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি পানির নিচে এবং ২৫ ফুট ৫ ইঞ্চি পানির ওপরে দৃশ্যমান।
দিব্যক জয়স্তম্ভ উপরের অংশে রয়েছে খাচকাটা নানারকমের কারু কাজ করা এবং দিব্যক জয়স্তম্ভটি চারপাশে সুন্দর মনোরম পরিবেশের মধ্যে অবস্থিত এবং এই জয়স্তম্ভটি জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে বেশ পরিচিত।
পতিসর রবীন্দ্র কাছারি বাড়িঃ নওগাঁর আত্রাই উপজেলার কালিগ্রাম ১৮৩০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গ্রামে জমিদারি খাজনা আদায়ের জন্য গড়ে তোলেন নানা স্থাপনা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯১ সালে প্রথম এই জমিদারি কেন্দ্রে আসেন সে সময় প্রতিসরের চারপাশের নান্দনিকতা মুক্ত করে কবিকে তাই তিনি দীর্ঘ সময় পার করেন এই প্রতিসরে।
প্রতিসরের দর্শনার্থীরা ঘুরে দেখেন বিভিন্ন স্থাপত্য ও কবির ব্যবহৃত চেয়ার আর কবির পারিবারিক সব ছবি। কবি এখানে রচনা করেন কালজয়ী কবিতা আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে সহ অনেক নামকরা গল্প ও কবিতা। কবি ভক্তরা আশপাশের এমন নান্দনিক পরিবেশ ও তার নিজ হাতে লেখা কবিতা ও গল্প দেখে মুগ্ধ হন।
অপরূপ সুন্দর এই নওগাঁ জেলায় ছিল প্রাচীন জনগোষ্ঠীর আবাসস্থান। তাই এই জেলায় রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান। নওগাঁ জেলার কিছু বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান সমূহঃ
১) পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার
বাংলাদেশের সব থেকে বিখ্যাত ও প্রাচীনতম বৌদ্ধবিহার, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার নওগাঁ জেলায় অবস্থিত। পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপাল অষ্টম শতাব্দীর শেষের দিকে অথবা নবম শতাব্দীর শুরু দিকে এই স্থাপনাটি নির্মাণ করেন।
এবং এটি ১৮৭৯ সালে স্যার আলেকজান্ডার কাইনহম আবার এই নির্দেশনাটি আবিষ্কার করেন। ইউনেস্কোর মতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার হচ্ছে দক্ষিণ হিমালয়ের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ বৌদ্ধবিহার। নওগাঁ জেলার ঐতিহাসিক নিদর্শন গুলোর মধ্যে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার অন্যতম সেরা।
২) দুবলহাটি রাজবাড়ী
কথিত আছে, রঘুনাথ নামে একজন ব্যক্তি এখানে এসেছিলেন লবণ ও গুড় চাষের জন্য। তিনি দীগলি বিলের মধ্য দিয়ে রাজ রাজেশ্বরী দেবীর মূর্তি তুলে তার পূজা শুরু করেন, পরবর্তীতে রঘুনাথ অনেক ধনী ব্যবসায়ী হয়। কিছু ইতিহাসবিদের মতে দুবলহাটি রাজবাড়ী রঘুনাথ নির্মাণ করেন।
দুবলহাটি রাজবাড়ী প্রায় ২০০শ বছরের পুরনো স্থাপনা। অনেকের মতে এই রাজবাড়ীর শেষ প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে হরণাথ রায় চৌধুরী। এটি নওগাঁ জেলার ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা একটি স্থান।
৩) দিবর দীঘি
নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার দিবর নামক একটি ইউনিয়নে এই দিঘিটি অবস্থিত। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক দিঘি গুলোর মধ্যে দিবর দীঘি অন্যতম। পাল সাম্রাজ্যের সময়ে এই দীঘি খনন করা হয়। কৈবর্ত রাজা দ্বিতীয় পাল রাজাকে পরাজিত করে পাল সাম্রাজ্য দখল করে।
এবং, সেই স্মৃতিকে কেন্দ্র করে ৬০ বিঘা বা ১৯ একর জমি নিয়ে দিবর দিঘি খনন করা হয়েছিল। এই দিঘির অন্যতম সুন্দর একটি বৈশিষ্ট্য হলো দীঘির মধ্যে একটি পাথরের স্তম্ভ রয়েছে। এই পাথরের স্তম্ভ কত সালে তৈরি করা হয়, এই সম্পর্কে কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারেনি।
৪) কুসুম্বা মসজিদ
এটি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কুসুম্বা নামক একটি গ্রামে অবস্থিত। আফগানি শাসনামলে সুর বংশের শেষের দিকে সুলতান গিয়াস উদ্দিনের শাসন আমলে সুলাইমান নামক একজন ব্যক্তি এই মসজিদটি নির্মাণ করেন।
কুসুম্বা মসজিদের পূর্ব পাশে রয়েছে কুসুম্বা দিঘি। প্রজাতন্ত্র অধিদপ্তর ২০১৭ সালে মসজিদের চারপাশে ফুলের বাগান নির্মাণসহ বিভিন্ন ধরনের আলোকসজ্জার কাজ করেন। মজার বিষয় হলো বাংলাদেশের ৫ টাকার নোটে কুসুম্বা মসজিদের ছবি রয়েছে।
৫) বলিহার জমিদার বাড়ি
বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। গুলোর মধ্যে বলিহার জমিদার বাড়ি অন্যতম। সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে নৃসিংহ চক্রবর্তী নামের একজন ব্যক্তি জায়গির লাভ করেন এবং এই জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেন। এখানকার শেষ জমিদার ছিলেন জমিদার বিমেলেন্দু রায়।
তিনি দেশ বিভাগের সময় ভারতে চলে যান এবং সেখানে স্থায়ী হন। বলিহার জমিদার বাড়ির পরিচালনায় রয়ে যান এখানকার কর্মচারীরা। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে এখানকার দেখভালের জন্য কেউ ছিল না। যার ফলে আস্তে আস্তে এই জমিদার বাড়ি ধ্বংসের পথে।
৬) রঘুনাথ মন্দির
শ্রী শ্রী রঘুনাথ জিও মন্দির, স্থানীয় লোকেরা এটিকে ঠাকুরমান্দা মন্দির হিসেবে চিনে থাকে। যদিও রঘুনাথ মন্দিরটি অনেক ছোট তবে এর ইতিহাস অনেক বড়। একজন অন্ধ ব্যক্তি এর আশেপাশে থাকা বিলে গোসল করতে যায়, তার নাম ছিল মান্দা দেবী। তিনি তখন তিনটা বিগ্রহ খুঁজে পান। যেগুলো ছিল রাম, লক্ষণ ও সীতার বিগ্রহ। তিনি সেগুলোকে তার বাসায় নিয়ে আসেন এবং পূজা করতে শুরু করেন।
একসময় তার চোখ ভালো হয়ে যায় এবং তিনি দারিদ্র্য থেকে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে এই ঘটনা পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে, তখন তৎকালীন নাটোরের রাজা রানী ভবানী এখানে একটি মন্দির স্থাপনা করেন। পরবর্তীতে এটিকে লোকজন মান্দা মন্দির হিসেবে বলে থাকে। এবং উক্ত নাম অনুসারে এই উপজেলার নাম রাখা হয় মান্দা উপজেলা।
৭) তালের গাছের সম্রাজ্য
নওগাঁ জেলার মাহাতাপুর ইউনিয়নের তালতলী গ্রাম (ঘুঘুডাঙ্গা নিয়ামতপুর)। যেখানে তালের গাছের সম্রাজ্য। তালতলী গ্রামের প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে এক পায়ে দাঁড়িয়ে তালগাছ উঁকি মারে। কথিত আছে, তালতলী গ্রামে তালের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন গহের আলী নামক একজন ভিক্ষুক।
তিনি ১৮,০০০ থেকে ২০,০০০ গাছ এখানে রোপন করেন। বর্তমানে নওগাঁ জেলার অন্যতম একটি সুন্দর্যপূর্ণ স্থান এই তালের সাম্রাজ্য তালতলী। তাছাড়া এই গ্রামের তাল গাছের পিছনে লুকিয়ে আছে চমৎকার এক ভিক্ষুকের ইতিহাস।
৮) জগদ্দল বিহার
নওগাঁ জেলার একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এটি। জগদ্দল বিহার নওগাঁ জেলার ধামুরহাট উপজেলায় অবস্থিত। স্থানীয় জনগণের মতে বটকৃষ্ণ রায় নামক একজন জমিদারের বাড়ির ধ্বংসবশেষ। দীনেশচন্দ্র সেনের মতে রাজা রামপাল এই জগদ্দল মহাবিহার প্রতিষ্ঠা করেন।
বর্তমানে এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর মালিকানায় রয়েছে। নওগাঁ জেলার ইতিহাস বহনকারী স্থাপনা গুলোর মধ্যে জগদ্দল বিহার অন্যতম।
এগুলো ব্যতীত নওগাঁ জেলায় আরো অনেক ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। যারমধ্যে অগ্রপুরী বিহার, ইসলামগাঁথী প্রাচীন মসজিদ ও মঠ, রাতোয়াল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়, কামতা এস,এন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হলুদ বিহার, মাহীসন্তোষের মাজার, জবই বিল, শালবন, আলতাদীঘি জাতীয় উদ্যান, ভিমের পান্টি, ভবানীপুর জমিদার বাড়ি, পতিসর রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি, দিব্যক জয়স্তম্ভ, ডানা পার্ক ইত্যাদি।
নওগাঁ জেলার খেলাধুলা ও বিনোদন
নওগাঁ জেলার সবথেকে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট ও ফুটবল। এই জেলার প্রায় সকল বয়সের মানুষ খেলাধুলা পছন্দ করেন। নওগাঁ জেলার মানুষ বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করেন। তারমধ্যে ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, কাবাডি, ভলিবল, টেনিস, সাঁতার, মুষ্টিযুদ্ধ, তীর নিক্ষেপ, ভার উত্তোলন ইত্যাদি।
বর্তমানে জনপ্রিয় খেলার স্থানগুলোর মধ্যে জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবনের পাশে সুন্দর একটি টেনিস গ্রাউন্ড রয়েছে। যেখানে নওগাঁ জেলা সহ বাংলাদেশের সকল ধরনের খেলার খবর পেতে যুক্ত থাকতে পারেন। naogaonsadar.naogaon.gov.bd এর তথ্য অনুযায়ী নওগাঁ সদর উপজেলায় অন্যান্য সকল খেলার থেকে ফুটবল খেলার মান ভালো।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS